জেলা সদর হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট চিকিৎসক আবুল কালাম আজাদকে এ নোটিশ দেয়া হয়।
জেলার মোরলগঞ্জের হামচাপুর গ্রামের আলম শেখের স্ত্রী রোজিনা বেগম (২০) ও তার মা নাছিমা বেগম (৪২) এবং সদর উপজেলার পঞ্চমালা গ্রামের জাহিদুল গাজীর স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৩০) ওই চিকিৎসকের হাতে মারধরের শিকার হন।
মারধরের শিকার রোগীর মা নাছিমা বেগম জানান, প্রসব ব্যাথা উঠলে রবিবার ভোরে মেয়েকে হাসপাতালের গাইনী বিভাগে ভর্তি করেন। সকাল ১০টার দিকে গাইনি বিভাগের চিকিৎসক আবুল কালাম আজাদ গাইনি ওয়ার্ডে রোগী দেখতে আসেন।
নাছিমা বেগমের অভিযোগ, কোনো কারণ ছাড়াই চিকিৎসক আবুল কালাম আজাদ তাকে চর-থাপ্পর মারে। মারধরের এক পর্যায়ে থাপ্পর মেরে তাকে মেঝেতে ফেলে দেয়।
তিনি আরো বলেন, চিকিৎসক আমাকে ওয়ার্ড থেকে বের হয়ে যেতে বলে। পরে বের হতে দেরি হওয়ায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে আরো চর-থাপ্পর মারতে থাকে।
প্রসূতি রোজিনা বেগমের অভিযোগ, তিনি বেডে যন্ত্রনায় কষ্ট পাচ্ছিলেন, এমন সময় চিকিৎসক এসে বলে তোর মাকে মেরেছি এবার তোকে মারবো। এই বলে তার মাথার ওপর দুই-তিনটি চর-থাপ্পর মারে।
চিকিৎসা নিতে এসে চিকিৎসকের হাতে মারধরের কষ্ট ভূলতে পারছে না ওই প্রসূতি এবং তার মা। তারা ওই চিকিৎসকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
গাইনী ওয়ার্ডে ভর্তি ফাতেমা বেগম নামে অপর এক প্রসূতির অভিযোগ, ওই দুজনকে চর-থাপ্পর মারার পর চিকিৎসক আমার কাছে এসে মাথায়ও কয়েকটা চড় দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চিকিৎসক আবুল কালাম আজাদ গাইনি ওয়ার্ডে এসে প্রায়ই রোগীদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। মাঝে মধ্যে রোগীদে চর-থাপ্পরও মারে। এদিনও ওই চিকিৎসক দুজন প্রসূতি এবং এক প্রসূতির মাকে চর-থাপ্পর মেরেছে।
এ ঘটনার সময় হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন জেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য জাহিদুল ইসলাম জাদু।
তিনি জানান, হঠাৎ চিৎকারের শব্দে গাইনি ওয়ার্ডে গিয়ে জানতে পারি, চিকিৎসক আবুল কালাম আজাদ দুজন প্রসূতিসহ তিনজনকে মারধর করেছে।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. অরুণ চন্দ্র মন্ডল জানান, ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রসূতির মা তার কাছে জবানবন্দি দিয়েছে। প্রাথমিকভাবে সে রোগীকে চর-থাপ্পর মারার সত্যতা পেয়েছি।
রোগী ও স্বজনকে মারধো করে ডা. আবুল কালাম আজাদ অপরাধ করেছেন উল্লেখ করে সিভিল সার্জন বলেন, অভিযুক্ত চিকিৎসককে শোকজ (কারণ দর্শাও নোটিশ) করা হয়েছে।
আগামি তিন দিনের মধ্যে শোকজের জবাব চাওয়ার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন সিভিল সার্জন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ডা. আবুল কালাম আজাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।